দক্ষিণ কোরিয়ায় গত মাসে বিধ্বস্ত হওয়া জেজু এয়ার বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমানের দুই ইঞ্জিনেই শীতকালীন পরিযায়ী হাঁস বাইকাল টিলের ডিএনএ পাওয়া গেছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) প্রকাশিত ছয় পৃষ্ঠার প্রাথমিক প্রতিবেদনে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, উভয় ইঞ্জিনে হাঁসের নমুনা মিললেও এটি দুর্ঘটনার মূল কারণ কিনা, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।
দুর্ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ গত ২৯ ডিসেম্বর ব্যাংকক থেকে আসা ফ্লাইটটি দক্ষিণ কোরিয়ার মুআন বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের সময় রানওয়ে অতিক্রম করে মাটির বাঁধে ধাক্কা খায়। ফলে বিমানটিতে আগুন ধরে যায় এবং আংশিক বিস্ফোরণ ঘটে। ১৮১ জন যাত্রীর মধ্যে মাত্র দুইজন বেঁচে ছিলেন, যা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধাক্কার ফলে উভয় ইঞ্জিন মাটির নিচে ঢুকে যায় এবং প্লেনের সামনের অংশ ৩০০ মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার সময় ধাক্কা লাগা বাঁধটি রানওয়ের নেভিগেশন সিস্টেমের অংশ ছিল, যা দুর্ঘটনার ব্যাপকতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার এভিয়েশন ও রেলওয়ে অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন বোর্ড জানিয়েছে, ইঞ্জিন খুলে প্রতিটি যন্ত্রাংশের গভীর বিশ্লেষণ করা হবে। ফ্লাইট ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের তথ্য পরীক্ষা, বার্ড স্ট্রাইক ও বাঁধের ভূমিকা মূল্যায়ন করা হবে। পাইলটরা প্লেন অবতরণের সময় একটি পাখির ঝাঁক দেখতে পেয়েছিলেন, তবে সঠিক সময়ে বার্ড স্ট্রাইকের ঘটনা ঘটেছে কিনা তা নিশ্চিত নয়। পাইলটরা ‘মে ডে’ সংকেত পাঠিয়েছিলেন এবং গ্লাইডপাথ থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন।
তবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, দুর্ঘটনার মাত্র চার মিনিট আগে ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (CVR) এবং ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার (FDR) বন্ধ হয়ে যায়, যা তদন্তের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, দুর্ঘটনার ৩০ দিনের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতিবেদনটি শেয়ার করেছে, কারণ বিমান ও ইঞ্জিনের নির্মাতারা এই দেশগুলোর।
তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন এক বছরের মধ্যে প্রকাশ করার কথা রয়েছে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.