রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৯ মিনিটে ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল ঢাকার অদূরে নরসিংদী অঞ্চলে। আকস্মিক এই ভূকম্পনে বহু মানুষ বাসা-বাড়ি ও অফিস থেকে আতঙ্কিত হয়ে বাইরে বের হয়ে আসেন, তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ভূমিকম্পের ইতিহাস বলছে, ভূমিকম্পের পরে সাধারণত আফটার শক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েকদিন পর্যন্ত অনুভূত হতে পারে।
ভূমিকম্পে কয়টি আফটার শক হয়?
আফটার শক কতটি হবে—এটির নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই। কখনো একটি বড় ভূমিকম্পের পরে দশ–বারোটি, আবার কখনো শতাধিক আফটার শক পর্যন্তও হতে পারে। এটি নির্ভর করে ভূত্বকের চাপ, ভাঙনরেখার প্রকৃতি, এবং ভূমিকম্পের শক্তিমাত্রার ওপর।
ভূমিকম্পের আফটার শক কী?
আফটার শক হলো মূল ভূমিকম্পের পরে একই অঞ্চলে ঘটে যাওয়া ছোট কিন্তু অনুভূতিযোগ্য কম্পন।
মূল ভূমিকম্পে যখন ভূপৃষ্ঠের নিচের চাপ হঠাৎ কমে বা ভেঙে যায়, তখন আশপাশের এলাকায় সমতা ফিরে আসার প্রক্রিয়ায় ছোট ছোট কম্পন তৈরি হয়—এগুলোকেই আফটার শক বলা হয়।
ভূমিকম্পের কতদিন পর আফটার শক হতে পারে?
সাধারণত—
প্রথম ২৪ ঘণ্টায় আফটার শক সবচেয়ে বেশি হয়,
৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে এর পরিমাণ কমতে থাকে,
বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে সপ্তাহ বা মাসব্যাপী আফটার শক অনুভূত হতে পারে।
৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে সাধারণত কয়েকদিন ছোটখাটো আফটার শক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আফটার শক কি ভূমিকম্পের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হতে পারে?
সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী আফটার শক মূল ভূমিকম্পের চেয়ে দুর্বল হয়।
তবে খুবই বিরল ক্ষেত্রে আফটার শক মূল ভূমিকম্পের কাছাকাছি মাত্রার বা একটু বেশি শক্তিশালীও হতে পারে—যদিও এটি দেখা যায় অনেক বড় (৭ বা ৮ মাত্রার) ভূমিকম্পে।
ঢাকার কাছাকাছি হওয়া এই ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে শক্তিশালী আফটার শকের আশঙ্কা কম বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
আফটার শক কীভাবে হয়?
ভূমিকম্প হওয়ার সময় পৃথিবীর ভূত্বকের প্লেট বা শিলাস্তর ভেঙে যায় এবং প্রচণ্ড চাপ মুক্ত হয়।
এরপর ওই ভাঙা অংশের চারপাশে প্লেটগুলো নতুন ভারসাম্য খুঁজতে থাকে,
চাপ সামঞ্জস্য করতে গিয়ে ছোট ছোট শক্তি মুক্ত হয়, এই শক্তি মুক্ত হওয়ার সময় যে কম্পন সৃষ্টি হয়— সেটাই আফটার শক। অর্থাৎ, আফটার শক হলো ভূমিকম্পের পরে পৃথিবীর ভেতরের স্বাভাবিক পুনঃসমতা প্রক্রিয়ার অংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার নিকটবর্তী অঞ্চলে ভূমিকম্পের উৎসস্থল হওয়ায় এ ধরনের কম্পন ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা। ভবন নির্মাণে দুর্বল কাঠামো, ঘনবসতি এবং দুর্বল ভূগঠন—এই তিন মিলিয়ে রাজধানী উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলে ভবন নির্মাণে মান বজায় রাখা ও সাধারণ মানুষকে সচেতন করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন ভূতাত্ত্বিকরা।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.