দিনাজপুরের ঐতিহাসিক কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে ২৭৩ বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব ও মাসব্যাপী রাস মেলা। আনুষ্ঠানিকভাবে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রিয়াজ উদ্দিন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ দেবোত্তর এস্টেটের এজেন্ট রনজিৎ সিংহ, রাজ দেবোত্তর এস্টেটের সদস্য ও দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বরূপ বকসী বাচ্চু, সদস্য ডা. ডিসি রায় প্রমুখ। উদ্বোধনী পর্ব শেষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতি বছর রাস পূর্ণিমার তিথিতে এ রাস উৎসব পালিত হয়ে আসছে। ১৯৫২ সাল থেকে এটি বৃহৎ পরিসরে আয়োজিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এই উৎসব ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবনে রাধা ও গোপীদের সঙ্গে রাসলীলার স্মরণে পালিত হয়, যা প্রেম, ভক্তি ও আত্মার ঈশ্বরের প্রতি অনন্ত নিবেদনের প্রতীক।
দিনাজপুর রাজপরিবারের রাজা প্রাণনাথ ১৭০৪ সালে কান্তজিউ মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন, যা তার পোষ্যপুত্র রামনাথ ১৭৫২ সালে সম্পন্ন করেন। এরপর থেকেই এই মন্দির প্রাঙ্গণে নিয়মিতভাবে রাস উৎসব ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
উৎসব উপলক্ষে মন্দিরের সামনে বসেছে রঙিন পসরা ও গ্রামীণ হাট। খেলনা, ধর্মীয় বই, মাটির পণ্য, গৃহসজ্জার সামগ্রীসহ নানা স্থানীয় দ্রব্যে ভরে উঠেছে দোকানপাট। সন্ধ্যা নামলেই আলোকসজ্জায় ঝলমল করে ওঠে পুরো মন্দির এলাকা, সৃষ্টি হয় অপূর্ব দৃশ্য।
দেশের বিভিন্ন জেলাসহ প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকেও শতশত নারী-পুরুষ ভক্ত-পুণ্যার্থী ও পর্যটক এই রাস উৎসব ও মেলায় অংশ নিতে দিনাজপুরে ভিড় জমাচ্ছেন। উৎসব ঘিরে পুরো এলাকায় এখন উৎসবমুখর ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যময় পরিবেশ বিরাজ করছে।
দর্শনার্থীদের বক্তব্যে তাঁরা বলেন, প্রতি বছর এ সময়টার জন্য অপেক্ষা করি। ধর্মীয় অনুভূতির পাশাপাশি এটি এখন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
দেশ-বিদেশ থেকে আগত শতশত নারী-পুরুষ ভক্ত-পুণ্যার্থী ও পর্যটকের আগমনে কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গণ এখন পরিণত হয়েছে মানুষের মিলনমেলায়।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.