 
     ফুটবল ইতিহাসে এমন দৃশ্য খুব কমই দেখা যায়। হাত দিয়ে গোল করা কিংবা মাঝমাঠ থেকে একা দৌড়ে পুরো প্রতিপক্ষ রক্ষণকে বোকা বানিয়ে গোল—এই দুই কাজই একই ম্যাচে করে দেখিয়েছিলেন ৬৫ বছর আগের আজকের এই দিনে জন্ম নেওয়া দিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনা। ১৯৮৬ সালের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে করা সেই দুই গোল দিয়েই ম্যারাডোনা অমরত্ব পেয়েছিলেন।
ফুটবল ইতিহাসে এমন দৃশ্য খুব কমই দেখা যায়। হাত দিয়ে গোল করা কিংবা মাঝমাঠ থেকে একা দৌড়ে পুরো প্রতিপক্ষ রক্ষণকে বোকা বানিয়ে গোল—এই দুই কাজই একই ম্যাচে করে দেখিয়েছিলেন ৬৫ বছর আগের আজকের এই দিনে জন্ম নেওয়া দিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনা। ১৯৮৬ সালের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে করা সেই দুই গোল দিয়েই ম্যারাডোনা অমরত্ব পেয়েছিলেন।
সে ম্যাচের গল্পটাও নাটকীয়। বিশ্বকাপের আগে আর্জেন্টিনার অ্যাওয়ে জার্সি ছিল গাঢ় নীল, কিন্তু মেক্সিকোর গরমে তা পরে খেলা কঠিন ছিল। কোচ কার্লোস বিলার্দো তাই খুঁজছিলেন হালকা রঙের জার্সি। তখনই ম্যারাডোনা এসে এক জার্সি হাতে নিয়ে বলেছিলেন, ‘বাহ, জার্সিটা সুন্দর, আমরা এটা পরেই ইংল্যান্ডকে হারাব।’ ব্যস! সেটাই হয়ে গেল ইংল্যান্ড ম্যাচের জার্সি।
অ্যাজটেকা স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে কোনো গোল হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধেই ইতিহাস লিখলেন ম্যারাডোনা। প্রতিপক্ষের ভুলে পাওয়া বল তিনি মাথা দিয়ে হেড করার ভান করে বাঁহাতে ঠেলে দেন জালে। ফুটবল বিশ্ব তখন প্রথমবার দেখল ‘হ্যান্ড অফ গড’। সতীর্থরা প্রথমে উদযাপন করতে এগোয়নি। পরে ম্যারাডোনা নিজেই বলেছিলেন, ‘আরে এগোচ্ছো না কেন তোমরা? গোলটা বাতিল হয়ে যাবে তো!’ কিন্তু তিউনিসিয়ান রেফারি গোলটি দিয়ে দেন। ইংলিশরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে।
ফকল্যান্ড যুদ্ধের কারণে ম্যাচটি ছিল মানসিক এক যুদ্ধ। মাঠেও ছিল আগুনে পরিবেশ। কিন্তু ম্যারাডোনা সেখানে তৈরি করলেন ফুটবল ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত। গোলের চার মিনিট পর তিনি করে বসলেন ‘শতাব্দীর সেরা গোল’। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে নিজের অর্ধ থেকে দৌড় শুরু করেন। একে একে গ্যারি স্টিভেন্স, পিটার রেইড, টেরি বুচার, টেরি ফেনউইক—সবাইকে ছিটকে দেন। শেষে গোলরক্ষক পিটার শিলটনকেও ফাঁকি দিয়ে আলতো ছোঁয়ায় পাঠান বল জালে। দর্শকরা তখন উন্মত্ত উদযাপনে মেতে ওঠে।
ইংলিশ ফরোয়ার্ড গ্যারি লিনেকার পরে বলেছিলেন, ‘আপনি ট্যাকল দিচ্ছেন, সে আপনার পায়ের নিচ দিয়ে বল বের করে নিয়ে যাচ্ছে, এমনভাবে বল নিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছিল, যেন তার সামনে কেউ নেই… এই বিষয়টা বিস্ময়জাগানিয়া ছিল। সেদিনই সম্ভবত কারো গোল দেখে আমার মনে হয়েছিল আমার একটা হাত তালি দেওয়া দরকার; তবে আমি তা করিনি, কারণ তাহলে বাড়িতে গেলে আমাকে ধ্বংস করে ফেলা হতো।’
চার মিনিটের ব্যবধানে সেই দুই গোল শুধু ম্যাচই বদলে দেয়নি, বদলে দিয়েছিল ফুটবল ইতিহাসও। একদিকে ‘হ্যান্ড অফ গড’—বিতর্কের প্রতীক, অন্যদিকে ‘গোল অফ দ্য সেঞ্চুরি’—ফুটবলের পরিপূর্ণ শিল্প। আর এই দুইয়ের মাঝখানে ডিয়েগো ম্যারাডোনা আলগোছে নাম লিখিয়ে ফেলেছিলেন ইতিহাসের পাতাতে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.