পাকিস্তানের বিপক্ষে দারুণ এক জয়ে শুরুর পর মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভিন্ন কিছুর আভাস দিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর আরও দুটি ম্যাচে সম্ভাবনা জাগালেও নিগার সুলতানা জ্যোতির দল তিরে গিয়ে তরী ডোবায়। টানা চার হারের পরও সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ ছিল টাইগ্রেসদের। বাকি তিন ম্যাচেই তাদের জিততে হতো। কিন্তু শ্রীলঙ্কার কাছে অবিশ্বাস্য হারের পর আরও একবার স্বপ্নভঙ্গের হতাশা নিয়ে ফিরতে হচ্ছে।
লঙ্কানদের দেওয়া ২০৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শেষ ৫ ওভারে স্রেফ ২৭ রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। হাতে তখনও ৭টি উইকেট। কিন্তু সেই ম্যাচও বাংলাদেশ ৭ রানে হেরেছে। শেষদিকে দলীয় খাতায় ১ রান যোগ করতেই হারিয়েছে ৫ উইকেট। নিশ্চিত জয়ের ম্যাচ অবিশ্বাস্য উপায়ে হারের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক জ্যোতি শেষদিকে চাপ নিতে না পারার ব্যর্থতা স্বীকার করেছেন।
এর আগে ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও দ্রুত ৫ উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। ইংল্যান্ড হিদার নাইটের বদৌলতে সেই জয় কেড়ে নেয়। আর প্রোটিয়াদের বিপক্ষে হাতের ক্যাচ ছেড়ে ম্যাচও ফসকে ফেলে টাইগ্রেসরা। ফলে শেষ ওভারে হার। তিনটি ম্যাচে তিরে গিয়ে তরী ডোবানোর কারণ জানিয়ে জ্যোতি বলেন, ‘আমরা এমন ৩টি ম্যাচ হারলাম। এটি অবশ্যই হৃদয়বিদারক। কোনো কোনো মুহূর্তে, কোনো কোনো পরিস্থিতিতে আমরা নিজেদের পরিকল্পনায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। আমরা নিয়মিত উইকেট হারিয়েছি, স্নায়ুর চাপ ধরে রাখতে পারিনি।’
অন্য দলগুলো শেষমুহূর্তে স্নায়ু ধরে রেখে কীভাবে চাপ সামলায় তা দেখলেও, নিজেদের ব্যর্থতা সরলভাবেই স্বীকার করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘এই ধরনের রান তাড়ায় আমরা টিভিতে দেখেছি, অন্য দলগুলো ক্রিজে নিজেদের ধরে রেখেছে। কিন্তু আমরা সেটি পারিনি। আমরা এই চাপ নিতে পারিনি। আমাদের এটি নিয়ে ভাবতে হবে।’
লক্ষ্য তাড়ায় ৪৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে জ্যোতি ও শারমিন সুপ্তা মিলে ৮২ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু সুপ্তাকে মাঝপথে রিটায়ার্ট হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় পায়ের ক্র্যাম্প নিয়ে। সেখানেই মোমেন্টাম বদলায় বলে ধারণা জ্যোতির, ‘যেভাবে ব্যাটিং করছিলাম, শুরু থেকেই এটি আমাদের ম্যাচ ছিল। আমি আর সুপ্তা খুব ভালো ব্যাট করছিলাম। সে যখন ক্র্যাম্পের কারণে বাইরে চলে গেল, মোমেন্টামও কিছুটা বদলে গেছে।’
এরপর স্বর্ণা আক্তারের সঙ্গেও ৫০ রানের জুটি বাঁধেন জ্যোতি। কিন্তু দ্রুত উইকেট হারিয়ে আর গন্তব্যে পৌঁছা সম্ভব হয়নি। জ্যোতি বলেন, ‘তখন (সুপ্তা মাঠ ছাড়ার পর) স্বর্ণা এসেছে এবং আবার জুটি গড়তে হয়েছে আমাদের। ভালোই যাচ্ছিল। তবে আমরা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট হারিয়েছি। এই রান তাড়ার করার মতো ছিল।’ বিশ্বকাপে আর একটি ম্যাচ বাকি বাংলাদেশের, কিন্তু ভারতের বিপক্ষে সেই লড়াই এখন কেবলই নিয়মরক্ষার। ৬ ম্যাচে ৫ হারে তাদের পয়েন্ট ২।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.