এবার ইউরোপের দেশ পর্তুগালের পার্লামেন্টে পাশ হয়েছে বোরকা নিষিদ্ধের আইন। এর ফলে জনসমাগমপূর্ণ স্থানে বোরকা পড়া যাবে না দেশটিতে।
দেশটির পার্লামেন্টে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) পাশ হয়েছে এ আইন। কয়েক দিন আগে বিল আকারে প্রস্তাবটি এনেছিল দেশটির কট্টর ডানপন্থি চেগা পার্টি। কয়েক দিন ধরে প্রস্তাবটির পক্ষে-বিপক্ষে তর্ক-বিতর্ক হয়। খবর আল-জাজিরা ও দ্যা গার্ডিয়ানের।
পর্তুগাল অবশ্য ইউরোপের প্রথম দেশ নয়, যারা আইন করে বোরকা নিষিদ্ধ করল। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে প্রথম আইন জারি করে জনসমাগমপূর্ণ স্থানে বোরকা নিষিদ্ধ করে বেলজিয়াম।
২০১০ সালে এ আইন পাস হয় ব্রাসেলসের পার্লামেন্টে। তারপর ২০১৬ সালে ফ্রান্স, ২০১২ সালে নেদারল্যান্ডস, ২০১৬ সালে বুলগেরিয়া, ২০১৭ সালে অস্ট্রিয়া এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডে এই আইন পাস ও কার্যকর করা হয়েছে।
পার্লামেন্টে তর্ক-বিতর্কের সময় চেগা পার্টির এমপিরা বলেছেন, পর্তুগালে অধিকাংশ মেয়ে এবং নারী স্বেচ্ছায় বোরকা পরেন না। পারিবারিক ও ধর্মীয় চাপের কারণে তারা বোরকা পরতে বাধ্য হন। এটা একধরনের পীড়ন বা জুলুমবাজি।
পরে পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটের ভিত্তিতে পাস হয়েছে আইনটি। নতুন আইনে বলা হয়েছে, এখন থেকে দেশের কোনো জনসমাগমপূর্ণ স্থানে এমন কোনো পোশাক বা বস্ত্রখণ্ড কোনো নারী-পুরুষ পরতে পারবেন না, যা মুখাবয়ব বা মুখমণ্ডল ঢেকে রাখে।
যদি কেউ এই আইন অমান্য করেন, তাহলে তাকে সর্বনিম্ন ২০০ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৮ হাজার ৪৭৬ টাকা) থেকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৫২০ টাকা) জরিমানা প্রদান করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, পর্তুগালের সামাজিক মূল্যবোধ ও রীতিনীতিতে মুখমণ্ডল উন্মুক্ত রাখাকে সম্মান করা হয়। যেসব অভিবাসী ইতোমধ্যে দেশের নাগরিক হয়েছেন এবং যারা নাগরিকত্বের অপেক্ষায় আছেন, তাদের অবশ্যই পর্তুগালের সামাজিক রীতিনিতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
অন্যদিকে বিরোধীরা বলেন, নতুন এই বিলটি বৈষম্যমূলক। পর্তুগালের সামাজিক মূল্যবোধে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টি স্বীকৃত এবং নতুন বিলে ধর্মীয় স্বাধীনতায় আঘাত হানা হয়েছে।
তারা আরও বলেন, আইনটির ফলে দেশে বসবাসরত একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় (মুসলিম) চাপ অনুভব করছেন।
কয়েক দিন তর্ক-বিতর্ক চলার পর শুক্রবার পার্লামেন্টে ভোটের জন্য বিলটি তোলার পর সংখ্যাগরিষ্ট এমপি সেটির পক্ষে ভোট দেন। ফলে শুক্রবার থেকেই আইনে পরিণত হয়েছে সেই বিল।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.