কোরআনকে সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দের সঙ্গে তিলাওয়াতের জন্য তাজবিদ জানা জরুরি। তাজবিদ হলো কোরআনকে সঠিক ও সুন্দর উচ্চারণে তিলাওয়াত করার নিয়মাবলী। এর আভিধানিক অর্থ হলো 'সৌন্দর্যমণ্ডিত করা' বা 'উত্তম করা'।
তাজবিদ অনুসারে তিলাওয়াত করা ওয়াজিব, কারণ এর মাধ্যমে আরবি হরফগুলোর সঠিক উচ্চারণ, মাখরাজ (উচ্চারণ স্থল) এবং সিফাত (উচ্চারণের বৈশিষ্ট্য) অনুসরণ করে তিলাওয়াত করা হয়, যা অর্থের বিকৃতি রোধ করে।
কোরআন তিলাওয়াতকে সুন্দর ও গভীর করার জন্য এখানে চারটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল ও উপায় তুলে ধরা হলো—
১. স্বরবিন্দু বা উচ্চারণের স্থান জানুন
প্রতিটি অক্ষর ঠিকভাবে উচ্চারণ করতে শেখা প্রয়োজন। সঠিক উচ্চারণ কোরআনের অর্থ অটুট রাখে এবং প্রতিটি শব্দকে সৌন্দর্যময় করে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, আরবি ‘তা’ -অক্ষরের জন্য জিহ্বার মাথা উপরের সামনের দাঁতের পাশে লাগিয়ে উচ্চারণ করতে হয়, যা বাংলায় ‘ত’ শব্দের মতো শব্দ তৈরি করে।
২. অক্ষরের বৈশিষ্ট্য আয়ত্ত করুন
প্রতিটি অক্ষরের বিশেষ বৈশিষ্ট্য—যেমন কোমলতা বা জোর—বোঝা জরুরি। এর ফলে তেলাওয়াতের গভীরতা ও মার্জিত ভাব বাড়ে। উদাহরণস্বরূপ, কালকালাহ অক্ষরগুলো, ক্বফ, ত, বা, জিম, দান— সুকূনসহ উচ্চারণ করলে প্রতিধ্বনি বা ‘বাউন্সিং’ ধ্বনি তৈরি হয়।
৩. নাসিক ধ্বনির নিখুঁত প্রয়োগ
নূন সাকিন এবং তানবিনসহ নাসিক ধ্বনির (গুন্নাহ) নিয়ম তাজবিদের অন্যতম মূলভিত্তি। সঠিক প্রয়োগ তেলাওয়াতের প্রবাহ ও সৌন্দর্য বহুগুণে বৃদ্ধি করে।
৪. ধ্বনির দীর্ঘায়ন শিখুন
কোন শব্দ কতক্ষণ ও কখন দীর্ঘ করতে হবে তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক প্রয়োগ তেলাওয়াতকে ছন্দময় ও গভীর করে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো অক্ষরে ‘মাদ্দ’ চিহ্ন থাকলে সেটি কয়েক সেকেন্ডের জন্য দীর্ঘ করতে হয়।
এই কৌশলগুলো সহজভাবে আয়ত্ত করতে এবং স্বাচ্ছন্দ্যময়ভাবে শিখতে সহায়তা নিতে পারেন আলেম ও কোরআনের শিক্ষকের কাছে। নিজের সুবিধামতো কোনো আলেমের কাছে গিয়ে সহজে শিখতে পারবেন।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.