রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোট গণনা পদ্ধতি নিয়ে পাল্টাপাল্টি দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবির। নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়ে ছাত্রদল ম্যানুয়াল ভোট গণনার (হাতে গণনা) করার দাবি জানিয়েছে।
অন্যদিকে দ্রুত ফলাফল প্রকাশের সুবিধার্থে অত্যাধুনিক ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) পদ্ধতি ব্যবহারের দাবি জানিয়েছে ইসলামি ছাত্রশিবির। গত বুধবার এসব দাবি জানিয়ে ছাত্রদল ও শিবিরের প্যানেল দুটি পৃথক পৃথক স্মারকলিপি জমা দেন।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ৬টি দাবিগুলো হলো- ভোট গ্রহণে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স নিশ্চিতকরণ, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনা, ভোট সম্পৃক্ত ব্যাতীত অন্য কেউকে কেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে আসতে না দেওয়া, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রক্ষার্থে কালো টাকার প্রভাব প্রতিরোধ এবং সকল প্রার্থীর জন্য নির্বাচনী আচরণবিধি মনিটরিং এর মধ্যে আনা।
ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন (আবির) বলেন, ‘ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে (হাতে) ভোট গণনা করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু জনবল বাড়ালে সময় কমানো সম্ভব। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যথেষ্ট জনবল আছে। এই দাবিগুলো শুধু ছাত্রদলের নয়। এটা আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেই জানিয়েছি। আমরা ওয়ার্নিং দিয়ে বলতে চাই, আমাদের দাবিগুলো মেনে নিন। তা না হলে ছাত্রদল না; সাধারণ শিক্ষার্থীরাই আপনাদের (নির্বাচন কমিশন) নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে।’
শিবির সমর্থিত প্যানেলের ৭ দাবির মধ্যে রয়েছে, নির্বাচন কেন্দ্রের পোলিং এজেন্টদের প্রবেশাধিকার ও দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষ হতে যাবতীয় সুবিধা নিশ্চিত করা; সাংবাদিকদের জন্য পৃথক আইডি কার্ডের ব্যবস্থা রাখা এবং কেবল প্রশাসন অনুমোদিত সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার প্রদান করা; ত্রুটিমুক্ত ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা এবং বিশেষজ্ঞ টিম রাখা; তবে কোনো প্রার্থী মেশিনে প্রযুক্তিগত সমস্যা নিয়ে আপত্তি করলে ম্যানুয়ালি ভোট গণনার ব্যবস্থা রাখা; প্রতিটি ভোটকেন্দ্র সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা; ভোটের দিন ক্যাম্পাসে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ রাখা এবং নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখা।
স্মারকলিপি প্রদান শেষে একটি সংবাদ সম্মেলনে ইসলামি ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে জাকসু নির্বাচনে দেখেছি নির্বাচনে ফলাফল আসতে তিনদিন সময় নিয়েছে। আমাদের এখানে ভোট কয়েকগুন বেশি। এতে আমাদের এখানে ফলাফল পেতে এক সপ্তাহ সময় লেগে যাবে। ফলে এখানে ত্রুটিমুক্ত ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা করতে হবে। তবে কোনো প্রার্থীর অভিযোগ থাকলে তা ম্যানুয়ালি থাকলে চেক করতে হবে।’
এভাবে পাল্টাপাল্টি দাবি নিয়ে রাকসু নির্বাচনে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণের দিন ক্যাম্পাসে ২ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে বলে জানান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান।#
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.