কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাগদাহ গ্রামে এক করুণ চিত্র দেখা গেছে। সবার চোখ এড়িয়ে, ভাঙা একটি টিনসেট ঘরে একাকী বসবাস করছেন ৭৭ বছর বয়সী বৃদ্ধা কছিরণ বেওয়া। বয়সের ভারে ন্যুব্জ এ নারীকে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ভরসা নিতে হচ্ছে ভিক্ষাবৃত্তির। ঘর বলতে আছে একটি ভাঙা কুঁড়েঘর, যার টিনের চাল বৃষ্টির পানি ঢোকা ঠেকাতে কোথাও কোথাও পলিথিন দিয়ে কোনোরকমে ঢাকা। শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা প্রতিটি মৌসুমেই কষ্ট যেন তার নিত্যসঙ্গী।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, এক সময়ের সংসার জীবনের স্মৃতি আজ শুধুই হাহাকার হয়ে বেঁচে আছে। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১৪ বছর আগে স্বামী জোনাব আলী মারা গেলে জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। সংসারের ভরণপোষণ কিংবা সহায়তা করার মতো কেউ না থাকায় কছিরণ বেওয়াকে নেমে আসতে হয় ভিক্ষাবৃত্তির পথে। প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে ঘুরে যা পান তাই দিয়ে অতিকষ্টে দিন পার করেন তিনি।
বৃদ্ধার ছেলেও থাকেন একই গ্রামে, তবে দীর্ঘদিন ধরে তার ঘরে তালা ঝুলছে। ফলে মা-ছেলের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে বললেই চলে। আশেপাশের প্রতিবেশীরা বলেন, কছিরণ বেওয়ার খোঁজ নেওয়ার মতো কেউ নেই। তিনি অনেক কষ্টে বেঁচে আছেন। অনেক সময় না খেয়ে থাকতে হয় তাকে।
স্থানীয়রা জানান, ভাঙা ঘরে বসবাসের কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হয় বৃদ্ধাকে। বৃষ্টি নামলেই পানি ঝরে পড়ে ঘরের ভেতর। কোনো রকমে ভিক্ষা করে যা পান তাই দিয়ে জীবনধারণ করলেও তার কষ্টের শেষ নেই। বয়সের কারণে শরীরের বিভিন্ন রোগে ভুগছেন, কিন্তু চিকিৎসার খরচ জোগাড় করার কোনো সামর্থ্যও নেই তার।
অসহায় এই বৃদ্ধার দিকে সরকারি বা বেসরকারি কোনো সাহায্যের হাত না বাড়ায় চরম মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন কছিরণ বেওয়া। স্থানীয় সচেতন মানুষজন প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এমন অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো দরকার। সরকার বা সমাজের বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসেন তবে তার শেষ বয়সের জীবন কিছুটা হলেও স্বস্তিতে কাটাতে পারবেন।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.