বাস্তবধর্মী শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী মহেড়া জমিদার বাড়ী পরিদর্শন করেছে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮২ ও ৮৩ তম ব্যাচের মোট ৩০ জন শিক্ষার্থী পূর্ববর্তী রাজা- জমিদারদের ঐতিহাসিক আবাসস্থল পরিদর্শনে অংশ নেন। পরিদর্শনটি তত্ত্বাবধান করেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শবনম জান্নাত, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অধ্যাপক ফারিশতা সিদ্দিকী এবং সহকারী অধ্যাপক সোহেল হোসেন।
ঐতিহাসিক নিদর্শনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা আনন্দ লজ, মহারাজ লজ, চৌধুরী লজের অভূতপূর্ব শৈল্পিক নিদর্শন ও স্থাপনা সরেজমিনে উপভোগ করেন।
এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক শবনম জান্নাত তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, মূলত
ফিচার এন্ড ক্রিয়েটিভ রাইটিং, ফটো জার্নালিজম এবং এডিটিং কোর্সের উপর ভিত্তি করে এই ফিল্ড কোর্সটির উদ্যোগ নেয়া হয়।
তিনি বলেন, ফিচার এন্ড ক্রিয়েটিভ রাইটিং কোর্সে বিচারের টাইপের মধ্যে মূলত ভ্রমণ ও ঐতিহাসিক স্থানের উপর ভিত্তি করে ফিচার লেখার বাস্তবভিত্তিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করার জন্য মূলত আমি আমার ছাত্রদেরকে এখানে নিয়ে এসেছি। এর পাশাপাশি, ফটো জার্নালিজম কোর্সে এরই আদলে শিক্ষার্থীরা ছবি তুলে তা মূল্যায়ন করবে এবং এডিটিং করছে শিক্ষার্থীরা ছবি তোলার মাধ্যমে ক্যাপশন রাইটিং করবে।
শবনম জান্নাত বলেন, একাডেমিক কার্যকলাপের পাশাপাশি এরকম বাস্তব ভিত্তিক অভিজ্ঞতাও শিক্ষার্থীদের পরবর্তী কর্মজীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আজকের কথা যদি বলি যে আমাদের জন্য তাপমাত্রাটি সহনীয় পর্যায়ে ছিলোনা, কিন্তু আমার শিক্ষার্থী যারা সাংবাদিকতায় পা রাখবেন তাদেরকে এরকম তপ্তরোদ, যদি আবহাওয়া এবং প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে খাপ খাইয়ে নিয়েই কাজ করতে হবে এবং আমি মনে করি আজকের এই ফিল্ড ট্রিপটি তাদের জন্য এক ভিন্ন রকমের অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।
মহেরা জমিদার বাড়ি সম্পর্কে তিনি তার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, প্রথমত জমিদার বাড়ির অপরূপ সৌন্দর্য যেটি কিনা ব্রিটিশ আমলে নির্মিত তবুও যথাযথ দেখাশোনাও পরিচর্যার ফলে সেটি এখনো আমাদের মাঝে দৃশ্যমান যা আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে। কিন্তু কিছু বিষয় আমার কাছে নেতিবাচক হিসেবে লেগেছে যেমন, একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন যেখানে তৎকালীন সময়ে রাজা- রাণী এবং জমিদারগণ থাকতেন তাদের সময়কার ব্যবহৃত জিনিসপত্র, ছবি, অলংকার কিংবা তৎকালীন সময়ের গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো যদি সংগ্রহ করে একটি জাদুঘর স্থাপন করা হতো তাহলে সেটি ভ্রমণ পিপাসু মানুষকে আরও আকৃষ্ট করতে পারতো বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
পরিদর্শন শেষে শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাসরুমে শেখার পাশাপাশি স্থান পরিবেশ এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী সাংবাদিকতার বাস্তবধর্মী দিকগুলো অবলোকন ছিল তাদের কাছে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
পাশাপাশি, বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে কিভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে সেটিরও বাস্তবধর্মী অভিজ্ঞতা পেয়েছেন বলেও জানান তারা।
১৮৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া দৃষ্টিনন্দন ইউরোপীয় ধাঁচের স্থাপত্যে নির্মিত এই জমিদার বাড়িতে রয়েছে তিনটি প্রধান ভবন যার নামগুলো হলো: আনন্দ লজ, চন্দ্রনাথ লজ ও মহারাজ লজ। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে মুক্তিকামী মানুষদের উপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। বর্তমানে এটি পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হলেও পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান উন্মুক্ত রয়েছে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.