চা-গাছে কুঁড়ি থেকে নতুন পাতা বের হওয়ার পর তা পচে যাচ্ছে। নতুন এই পাতাপচা রোগে দিশাহারা চাষিরা
দেশে এখন চায়ের ভরা মৌসুম। ধানি জমির মতো সমতলের সারি সারি চা-বাগানে এখন সবুজের সমারোহ। তবে হঠাৎ পাতাপচা রোগ দুশ্চিন্তায় ফেলেছে পঞ্চগড়ের চা চাষিদের।চাষিরা জানান, কুঁড়ি থেকে নতুন পাতা বের হওয়া মাত্রই তা পঁচে যাচ্ছে।
একদিকে পোকার আক্রমণ, অন্যদিকে নতুন এই পাতাপচা রোগে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তারা। নানা ওষুধ প্রয়োগ করেও কাজ হচ্ছে না বলে দাবি তাদের। এভাবে বাগান বাঁচানোর লড়াইয়ে বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদন খরচও। তাই চা পাতার ভালো দামেও স্বস্তিতে নেই চাষিরা।
চাষিরা আরো জানান, এবার প্রচণ্ড খরার প্রভাব পড়ে চা শিল্পে। অন্যদিকে বাগানে লাল মাকড়, কারেন্ট পোকা ও লোফারের আক্রমণ ছিল অনেক বেশি। তাই কমে যায় চা পাতার উৎপাদনও। এই সংকটের মধ্যেই নতুন করে মরার ওপর খরার ঘায়ের মতো হাজির পাতাপচা রোগ।
দ্রুত এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে বাগানগুলোতে। নরম ডগা কালচে রঙ ধারণ করে পচে শুকিয়ে যাচ্ছে।
পঞ্চগড় পৌরসভা এলাকার চা চাষি সুলতান মাহমুদ মিলন বলেন, চলতি মৌসুমের শুরুতেও চায়ের তেমন দাম ছিল না। ১৫ থেকে ১৬ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। এখন ২৪ থেকে ২৬ টাকা পর্যন্ত দাম দিচ্ছেন কারখানা মালিকরা।
তার পরও আমাদের পোষায় না। নতুন করে পাতাপচা রোগে আমরা দিশাহারা হয়ে পড়েছি। চা বাগান টিকিয়ে রাখতে সার-কীটনাশকসহ নানা ওষুধ প্রয়োগ করতে গিয়ে উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
ওই এলাকার চা চাষি মিলন বলেন, চা বাগানে আগের তুলনায় পরিশ্রম ও উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে। সার পাওয়া যাচ্ছে না। লাল মাকড়, লোফার ও কারেন্ট পোকার আক্রমণের পাশাপাশি এখন নতুন সমস্যা পাতা পঁচা রোগ। ওষুধ প্রয়োগ করেও কাজ হচ্ছে না। এখন দাম বেশি হলেও আমাদের খরচও অনেক বেড়েছে।
চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফ খান বলেন, প্রচণ্ড খরা ও গরমের কারণে এবার চা বাগানে লাল মাকড়ের আক্রমণ হয়। পরে শুরু হয় লোফারের আক্রমণ। এগুলো দমনের পর শুরু হলো পাতাপচা রোগ। যাদের পাতাপচা রোগ হয়েছে, তাদের আমরা ছত্রাকনাশক অর্থাৎ কপার, হাইড্রোক্সাইট, অক্সিক্লোরাইট ছিটানোর পরামর্শ দিচ্ছি।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরো বলেন, প্রথম স্প্রের ১৫ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় স্প্রে করতে হবে। এই পদ্ধতিতে পাতাপচা রোগ কমে যাচ্ছে। এই রোগের জন্য আমাদের উৎপাদন কমে গিয়েছিল। মাঝে কয়েক দিন পাতা পাওয়া গেছে তিন লাখ কেজি করে। এখন আবার তা বেড়ে পাঁচ লাখে পড়েছে। আশা করি এই সংকট খুব শিগগির কেটে যাবে এবং সমতলে এবার রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন হবে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.