রাজশাহী অঞ্চলে এবার টানা বর্ষণে ড্রাগন ফলের সাইজ ছোট হওয়ায় বাজারে দামও অনেক কম। ফলে লাখ লাখ টাকা খরচ করে বরেন্দ্র অঞ্চলের ড্রাগণ চাষিরা ভয়াবহ লোকশানের মুখে পড়েছেন। বর্তমানে বাগান থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে ড্রাগণ ফল বিক্রি করতে হচ্ছে চাষিদের। স্বল্বমূল্যে এই ফল বিক্রি করায় উৎপাদন খরচ মেটাতে পারছেন না চাষিরা। লাভজনক ফসল হওয়ায় বিগত কয়েক বছর ধরে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ি. তানোর, পবাসহ বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক হারে ড্রাগন চাষ করা হচ্ছে। বিগত বছরগুলো লাভ হইছে। কিন্তু এবার ভরা মৌসুমে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে ড্রাগণ ফলে লোকশান গুনতে হচ্ছে চাষিদের।
রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের চয়তুনপুর জামাই পাড়া গ্রামে ১৫ বিঘার অধিক জমিতে ড্রাগন চাষাবাদ করেছেন রাকিবুল ইসলাম রাকিব। তার বাগানে প্রচুর ড্রাগনের ফলন এসেছে। কিন্তু টানা বর্ষণে ফলের সাইজ অনেক ছোট। বাজারে এই ফলের দাম পাচ্ছেন না তিনি।
ড্রাগন ব্যবসায়ী রাবিকুল ইসলাম বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ড্রাগন বাগান তৈরীতে ব্যবহার করা তারের দাম, সারের দাম, বিদ্যুতের বিল এবং শ্রমিক খরচ। যে সকল মালামাল আমরা কম দামে কিনতাম সেগুলো বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তিনি বলে, তার বাগানে প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫ জন শ্রমিক রয়েছে তাদের খরচ বহন করতে হয়। বিগত বছরগুলোতে ড্রাগন ফল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করা হতো। এখন ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করতে হচ্ছে। ভ্যানে ফেরি করে আরো কম দামে বিক্রয় করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার প্রচুর পরিমানে ড্রাগন এসেছিল। কিন্তু এবার বৃষ্টিপাতা অনেক বেশি হওয়ার ফলে ড্রাগন অতি দ্রুত পেকে পচে যাচ্ছে। ফলের সাইজ অনেক ছোট। তাই দাম না পেলেও পচে যাওয়ার ভয়ে অতি দ্রুত ফল বাজার জাত করতে হচ্ছে।এতে উৎপাদন খরচ তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ১৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ৪০ হাজার চারা রোপন করেছি। গত তিন বছর যাবত ড্রাগন চাষাবাদ করছি ফলন তেমন পাইনি এবার ফলন ভালো এসেছে। কিন্তু দাম পাচ্ছি না। এই প্রকল্পে প্রায় ৯০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। চলতি বছরে মাত্র ৪ লাখ টাকার ফল বিক্রি করা হয়েছে। আরো অনেক ফল বাগানে রয়েছে। এখান থেকে আরো কিছু টাকা আসবে বলে আশাবাদী। তবে এবার লোকশান গুনতে হবে বলে জানান তিনি।
রাজশাহী পবা উপজেলার ডাংগীপাড়া গ্রামের ড্রাগন চাষি এরশাদ আলী বলেন, তিনি ১০ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করেছেন। গত বছর ২০ লাখ টাকার বিক্রি হয়েছিল। লাভ হয়েছে। কিন্তু এবার বাগানে ড্রাগণ এসেছে বেশ ভালো। টানা বর্ষণের কারণে ফলন কম। আবার এবার বাজারে ড্রাগণের দামও অনেক কম। ফলে এবার লাভ হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা জানান, লাভজনক ফসল হওয়ায় রাজশাহী বরেন্দ্র অঞ্চলে ব্যাপক পরিমাণে ড্রাগন চাষ হচ্ছে। তবে এবার অধিক বৃষ্টি এবং খাওয়ার অন্য উপকরণের দাম বাড়লেও ড্রাগন ফলের দাম কমে গেছে। তিনি আরও বলেন,
বৃষ্টিপাতের কারণে ফল ছোট হলেও এবার উৎপাদন ভালো হয়েছে। বর্ষা কেটে গেলে ড্রাগণের দাম বৃদ্ধি পাবে কৃষকরা লাভবান হবেন বলে জানান তিনি।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.